রাজীব মুন্সী
রংপুরের পীরগাছায় ইটভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে কয়েক দফা বৈঠকের পরও বিএনপি নেতা মালিকের গড়িমসির কারণে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কৃষকরা।
রোববার (৪ মে) দুপুরে উপজেলা চত্ত্বরে তারা ইটভাটা মালিককে গ্রেফতার এবং ভাটা উচ্ছেদের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
, উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের বামন সর্দার গ্রামের এমএসবি ব্রিকস নামের ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় উত্তর পাশের জমিগুলোতে ঝলসে যায়। বের হওয়া ধানগুলো চিটা হয়ে যায়। এ নিয়ে কৃষকরা রংপুর জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদফতর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন পত্রিকায় ফলাও করে সংবাদটি প্রকাশ করে। টনক নড়ে প্রশাসনের। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ইটভাটা মালিক, ইউএনও, কৃষি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা কয়েক দফা বৈঠক করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে ৭৮ জন কৃষকের ৪১ একর জমির ধান ক্ষতি নির্ধারণ করেন।
পরে আবারো বৈঠক করে শতক প্রতি ৫০০ টাকা হারে ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে প্রশাসন। মালিক পক্ষ এ টাকা দিতে সম্মত হন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার এবং গতকাল রোববার দুই দফা ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। ফলে গতকাল রোববার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ইটাভাটা মালিককে গ্রেফতারের দাবিতে উপজেলা চত্ত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় তারা প্রশাসনের তালবাহনা মানি না, মানব না, ভাটা মালিককে গ্রেফতার কর, করতে হবে, অবৈধ ভাটা উচ্ছেদ কর, করতে হবে, এ ধরনের নানা স্লোগান দিতে থাকে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বলছেন, ভাটা মালিক, ইউএনও, কৃষি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা কয়েক দফা বৈঠক করে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিতে একমত হন। কিন্তু ইটভাটা মালিক বিএনপি নেতা হওয়ায় তিনি এখন কারো কথা মানছেন না। ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমসি করছেন। আমরা অবিলম্বে ইটভাটা উচ্ছেদ চাই, মালিককে গ্রেফতার চাই।
ইটভাটা মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, অনেক জমি তেমন ক্ষতি হয়নি। তাই পুনরায় জমিগুলো ঘুরে তালিকা নির্ধারন করলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর মালিক পক্ষ এবং কৃষি বিশেষজ্ঞদের সাথে নিয়ে দুদিন ক্ষতিগ্রস্থ মাঠ ঘুরে ঘুরে ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করা হয়েছে। তারপরও তিনি কেন টাকা দিতে গড়িমসি করছেন বুঝি না। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, ভাটা মালিক বৈঠকে সবকিছু মেনে নিলেও এখন পুণরায় ক্ষতিপূরণ নির্ধারণে আবেদন করছেন। দু-এক দিনের মধ্যে এর সমাধান না হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।